বাংলাদেশ কি আদৌ কোনদিন অনুন্নত দেশের কালিমা হতে বেরিয়ে আসতে পারবে? আমাদের শাষন ব্যবস্থার কোন অংশ হতেই বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য করা হয়না, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে হাতের কাছে যা আছে তা নিয়েই আমাদের এগুতে হবে। দেশ নিয়ে আমাদের চাওয়া-পাওয়া এবং প্রত্যাশার সীমানা এতটা সংকুচিত এবং সীমাবদ্ব যে, এই গন্ডির বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা, আকাঙ্খা এবং স্বপ্ন সবগুলো যেন সাতসমুদ্র তের নদী পারের কোন দিবাস্বপ্ন, এবং অনেকের কাছে তা অপরাধের শামিল। কিন্তূ আমাদের মত অনেক দেশই দারিদ্র, অশিক্ষা, কুশিক্ষা হতে বেরিয়ে নিজের উপর দাড়ানোর চেষ্টা করছে। জনসংখ্যার চাপ যে একটা দেশের কাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখন আর বাধা নয় তার প্রমান আমাদের প্রতিবেশী ভারত এবং পূজিবাদী ব্যবস্থার সাক্ষাৎ যমদূত সমাজতান্ত্রিক চীন। জাতি হিসাবে আসলে আমরা কি চাই তার কোন রূপরেখাই এখন পর্য্যন্ত দাড় করাতে পারিনি। একটা বিষাক্ত বৃত্তের ভেতর রাজনীতিকে নির্বাসিত করে তার চারদিকে আমরা ঘুরছি অন্ধের মত। এই রাজনৈতিক চক্রকে আমরা এমন এক উচ্চতায় আসীন করেছি যার ভাল-মন্দ বিচারের অধিকার এখন আর জনগণের হাতে নেই। ’৭১ হতে ২০০৯, সময় কিন্তূ কম বয়ে যায়নি। ক্ষয়িষু- এবং ঘুনে ধরা একটা অর্থনীতিতে সার্বিক পরিবর্তন আনতে ৩৮ বছর যথেষ্ট সময়। ৩৮ বছর ধরে আমরা শুধু তত্ত্ব, ব্যক্তি এবং দলীয় নেশায় নেশাগ্রস্থ হয়ে রাজনৈতিক প্যাচাল করছি। এই নেশা এতটা ক্ষয়িষু পর্য্যায়ে চলে গেছে যার প্রভাবে মনুষ্যবোধের মৌলিক চাহিদা গুলো কবর দিতে বাধ্য হয়েছি।
বিশ্বায়নের যুগসন্ধিক্ষনে দাড়িয়ে বাংলাদেশের আগামী ১০০ বছরের দিকে তাকালে তাতে শুধু অনিশ্চয়তা আর অন্ধকারের ছায়া দেখা যাবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, জনসংখ্যার জ্যামিতিক বিস্ফোরন এবং রাষ্ট্রীয় পর্য্যায়ে অসততার লালন খুব শীঘ্রই আমাদেরকে সভ্য পৃথিবীর লায়াবিলিটিতে পরিনত করতে বাধ্য। ঈশ্বরের দয়া, ধনবানদের উচ্ছিষ্টের উপর ভর করে ১৫ কোটি মানুষের পথচলা কখনোই মসৃন হতে পারেনা। এই সহজ সত্যটুকু উপলদ্বি করার মত সৎ সাহষ কেড়ে নিয়েছে আমাদের অসৎ রাজনীতি। অতীত নিয়ে হানাহানি, অসততার বর্তমান এবং মিথ্যাচারের ভবিষৎ - এ গুলোয় আমাদের জাতীয় পরিচয়। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দু’বেলা দু’মুঠো আহার এবং মাথার উপর যেনতেন ছাদের জন্যে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে হাতাহাতি শুরু হতে বাধ্য। প্রশ্ন হচ্ছে, সে সময় হতে আমরা কত দূর?