আমার পরম পুজনীয় আব্বাহুজুর
আপনার চরন ধুলা কপালে মাখিয়া সিকি শততম পত্রখানা সুদুর লন্ডন হইতে লিখিতে বসিয়াছি।আমার মনে হইতেছে আপনি হয় আমাকে ভুলিয়া গিয়াছেন নয়তো জান্নাতের টিকেট পাইয়া চরম আনন্দের মাঝে থাকিয়া আমাকে আর লিখিবার সুযোগ পাইতেছেন না।আব্বাহুজুর আপনাকে কি নরকের অগ্নিকুন্ড হইতে ঈশ্বর ট্রান্সফার করিয়া স্বর্গে প্রেরন করিয়াছেন?তাহা হইলে তো আপনার কপাল খুলিয়াছে বলিতে হইবে।তাহা না হইলে তো দুনিয়াতে রাখিয়া যাওয়া পুত্রদ্বয় এবং পরিনীতা বধুকে ভুলিয়া যাইতেন না।আমার মনে হইতেছে আপনি স্বর্গের অপ্সরিদের সাথে রঙ ঢং করিয়া সময় কাটাইতেছেন।আপনার গুফের নীচে শিকারী বিড়ালের যে চিহ্ন রহিয়াছে তাহাতে স্বর্গের অপ্সরীদের ও যে আপনি শান্তিতে থাকিতে দিতেছেন না তাহা আমি আন্দাজ করিতে পারিতেছি।
আব্বাহুজুর আমার দেলোয়ার আঙ্কেল বাংলাদেশ হইতে এই মুহুর্তে একটি ট্রাঙ্কল করিয়াছেন।ইহা অত্যন্ত জরুরী বিধায় আপনার কাছ হইতে ক্ষনিকের জন্য বিদায় নিতেছি।বেয়াদবি মনে না করিয়া পরবর্তী অংশের জন্য অপেক্ষা করিবেন।আমি অতি তাড়াতাড়ি ফিরিয়া আসিতেছি,ততক্ষনের জন্য আল্লাহ হাফেজ।
আই এম ব্যাক আব্বাহুজুর।প্রথমে দেলোয়ার আংকেলের ট্রাংকলের কথা বলিয়া অন্য কথায় যাইতেছি।দেলোয়ার আংকেল আমাকে ট্রাংকলে জানাইয়াছেন খালাম্মাহুজুর নাকি একটা চমৎকার বাজেট দিয়াছেন।এই বাজেট বাস্তবায়ীত হইলে নাকি আওয়ামিলিগের কদর জনগনের কাছে বাড়িয়া যাইবে।তাই এখনই যাহা করার করিতে হইবে।জনগন তো আর বাজেট পড়িয়া দেখে না বা বাজেট বুঝার মত জ্ঞান বুদ্ধি তাহাদের নাই।আমরা কি জনগনকে এই কথা বুঝাইতে পারি না যে এই বাজেট গরীবের জন্য কল্যান মুলক নহে বা ইহাতে জনগনের অনেক ক্ষতি হইয়া যাইতে পারে?তিনি এই কথা ও জানিতে চাহিলেন এই ফাঁকে কোন আন্দোলনের কথা চিন্তা করা যায় কিনা।তাহা ছাড়া অনেক দিন হরতাল এবং ভাংচুর হইতেছে না।এই মুহুর্তে হরতাল বা ভাংচুরের কর্মসুচী দিলে মানুষ হয়তো লুফিয়া নিবে এবং অনেকদিন পর তাহাদের মন একটু চাঙ্গা হইবে।ট্রাংকলের জবাব দিতে গিয়া গত রাতে আপনার চিঠি কমপ্লিট করিতে পারি নাই।
আব্বাহুজুর খালাম্ম হুজুর যে ইতরামী শুরু করিয়া দিয়াছে তাহাতে মনে হইতেছে আমাদেরকে ঘায়েল করার সব প্রক্রিয়া শুরু হইয়া গিয়াছে।মাবুদে এলাহিই বলিতে পারিবেন এই খেলা ৫ বছরে গিয়া কোথায় ঠ্যাকিবে।ততদিনে হয়তো বাংলাদেশের মানুষ আপনার গড়া দলটির নাম ভুলিয়া যাইতে বসিবে।
আপনি হয়তো ১২০০ টিভিতে খালাম্মার কিছু আলামত দেখিতে পাইতেছেন,অবশ্য হুর হুজুরানদের নিয়া অতিশয় ব্যাস্ত থাকিলে অন্য কথা (হি হি হি)।বিডিআর ম্যাসেকারে তিনি আমাদের দলকে জড়াইবার চেষ্টা করিতেছেন।ইহাতে মনে হইতেছে আমাদেরকে দুনিয়া হইতে ভেনিষ করার প্রচেষ্টা চলিতেছে।আমার জাদরেল সাগরেদ পিন্টুকে নিয়া খালাম্মাহুজুর জব্বর খেলা শুরু করিয়াছেন।পিন্টুই নাকি বিডিআরের ঘটনায় একমাত্র মদদ দাতা!কি রকম মিথ্যাবাদী আমার খালাম্মাহুজুর এইবার বুঝুন।ঐ ঘটনায় আমাদের লোক জড়িত ছিল এই কথা জনগনের নিকট বলা হইতেছে অথচ তিনাদের লোকজন যে কতটুকু কি করিয়াছে তাহা সকলেই দেখিয়াছে।আমি লন্ডনে বসিয়া এইসব দেখিতেছি আর নিজের মাথার চুল নিজেই ছিড়েতেছি।আমি এই সময়ে বাংলাদেশে থাকিলে এইসবের প্রতিবাদ করিতে পারিতাম আর খালাম্মাহুজুরের খেলার জবাব খেলার মাধ্যমে দিতে পারিতাম।এইখানে থাকিয়া ও আমি চাল চালিয়া যাইতেছি।আমার চালে ভুল না হইলে খালাম্মার টিকা কতটুকু সহজ হইবে তাহাই দেখিবার বিষয়।
আবার বাজেটের কথায় ফিরিয়া আসি।আপনি হয়তো দেখিয়াছেন আমার মুহিত আংকেল কালো টাকাকে সাদা করিবার ঘোষনা দিয়াছেন।উনাদের ইতরামীর অর্থ কি আমরা বুঝি না বলিয়া ভাবিয়াছেন?আব্বাহুজুর খালাম্মার দলের লোকেরা কোটি কোটি টাকা লুটপাট করিতেছেন আর সেইসব টাকার না আছে কোন হিসাব,না আছে কোন ট্যাক্সের বালাই।এই করিয়া দেশের অর্থ কিভাবে অনর্থ পথে চলিয়া যাইতেছে তাহা জনগন বুঝিতে পারিতেছে।আব্বাহুজুর আমার পোলাপাইন বয়সে যে টাকা জমাইয়াছি আমার আংকেলরা বুড়া হইয়া গিয়াও সেই টাকার কিয়দংশের মুখও দেখিতে পাইবেন বলিয়া মনে হইতেছে না।আমার টাকা যে কোন পথে আসিতেছে তাহা আমি নিজে ও জানি না।দরদর করিয়া টাকা আসিতেছে আর লন্ডনে বসিয়া হরহর করিয়া খরচ করিতেছি।এই না হইলে আর আমার নাম মোহাম্মদ তারেক?হে হে হে ---।
আম্মাহুজুরকে ইদানীং খুবই বিমর্ষ দেখাইতেছে।জানি না কি কারনে আম্মাহুজুরের চেহারা মলিন হইয়া গিয়াছে।উনাকে আগের মত হাসি হাসি খুশী আর উৎফুল্ল দেখাইতেছে না।আমি লন্ডনে বসিয়া উনাকে ফোনে ধরিতে পারিতেছি না।কি কারনে আম্মাহুজুর আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করিয়া দিয়াছেন তাহা বোধগম্য নহে।শুনিতেছি টাকা পয়সা নিয়া ফালুর সাথে উনার কিছুটা গোলমাল পাকাইয়াছে।রংপুরের গেদু চাচা আর একটু বাড়াইয়া বলিলেন যাহা কিঞ্চিৎ শ্রুতিকটু বটে।উনি বলিলেন যৌবন ফুড়াইয়া গেলে মৌমাছি নাকি আর কাছে ভিড়ে না।যাউক গা এইসব কথা।
আমার ছোট ভাইটি সিঙ্গাপুরে আসিয়া আরো বখাটে হইয়াছে।বউ ঘরে রাখিয়া নাকি বিভিন্ন আজে বাজে জায়গায় রাত কাটাইতেছে।সিঙ্গাপুরের ছোট ছোট হেরেমখানায় ছেমরিদের সাথে লটর ফটর করিতেছে আর দুই হাতে টাকা পয়সা উড়াইতেছে।আমি শুনিয়াও না শুনার ভান করিতেছি কেননা এই আলুর দোষ তাহাকে ছোটবেলা হইতেই পাইয়া বসিয়াছে।তাহা ছাড়া আমিই বা তাহাকে শাষন করি কি করিয়া?আমি নিজেও তো এই জীবনে কম কিছু করি নাই।আমার কথা হইল বউকে সন্তুষ্ট রাখিয়া কোন কিছু করিলে তাহাতে দোষ কি?আর খেয়াল রাখিলেই হইল কোন সংক্রামক রোগ যেন আক্রমন করিতে না পারে।এইডস এর প্রকোপের কথা মনে রাখিলে সমস্যা তো থাকারই কথা নহে।কি বলেন ঠিক বলি নাই আব্বাহুজুর?
আব্বাহুজুর বিডিআরের বলি আমার চাচ্চুদের সাথে আপনার এখন পর্যন্ত কি দেখা হয় নাই?তাহারা কিভাবে ঐ জগতে তশরিফ আনিলেন তাহা কিন্তু আপনি আমাকে জানাইতে ভুলিয়া গিয়াছেন।আশা করি এই পত্রের জবাবে তাহা খোলাসা করিবেন।
আপনার খবর জানাইয়া সুখী করিবেন।আমি,সায়মা,সায়মার আম্মা সকলেই ভাল আছি।আবারো কদমবুচি জানাইয়া আজকের মত বিদায় নিতেছি।আল্লাহ হাফেজ।
আপনার চরন তলে আমার জান্নাত
ইতি তারেক