বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ্দের চেহারা চরিত্রের সাথে যাদের পরিচয় নেই তাদের কাছে সালহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী নামটা মনুষ্য চরিত্রের বহুমূখী রহস্য উন্মোচনে নতুন এক গবেষনার বিষয়বস্তূ হতে পারে। কি নেই এই আদম সন্তানের চরিত্রে? অখন্ড পাকিস্থান জাতীয় পরিষদের স্পীকার, বিশিষ্ট শিশু বলৎকারকারী জনাব ফজলুল কাদের চৌধুরীর বৈধ সন্তানদের একজন হয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই জুনিয়র চৌধূরী টিকে আছেন আপন মহিমায়। যেখানে অনেক রাঘব বোয়াল রাজনীতিবিদ্কে রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকতে হয় নেত্রী এবং দল পূজার কুকুর হয়ে, সেখানে সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধূরী এবং চৌধূরী পরিবারের বাকি রাজনীতিবিদ্রা টিকে আছেন পরিবারের প্রথাগত প্রতিপত্তি এবং দাপটের উপর ভিত্তি করে। ‘গত ৩০ বছর সংসদের আসনে বসে নিজকে ধন্য করিনি বরং যে আসনে বসেছি সে আসনটি ধন্য হয়েছে‘, এমন দম্ভোক্তি করে সাকা চৌ ইতিমধ্যেই নিজকে অন্য দশটা গতানুগতিক রাজনীতিবিদ হতে আলাদা করতে সমর্থ হয়েছেন। নিজকে রাজাকার বলে পরিচয় দিতে যার সামান্যতম কুণ্ঠাবোধ নেই, আবার ইসলামী সন্মেলন সংস্থায় সে দেশের হয়েই সংস্থার সর্বোচ্চ আসনে নির্বাচন করতেও যার বিবেকে বাধেনা, এমন বিতর্কিত চরিত্রের নাম সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধূরী। কথিত আছে, ’৭১ সালে নিজ হাতে দা এবং কুড়াল নিয়ে সংখ্যালঘু সহ অনেক পাকিস্থান বিরোধীদের কুপিয়ে মেরেছেন এই পাক পূজারী। জীবনের কোন পর্য্যায়ে নূন্যতম কোন অনুশোচনা দেখান্নি ৭১’এর কৃতকর্মের জন্যে। বিতর্কিত এই মানুষটার মূল শক্তি তার এলাকাভিত্তিক রাজনীতি, চৌধূরী পরিবারের নাম এবং তাদের অর্থে লালিত বিশাল সন্ত্রাষী বাহিনী। কেবল মাত্র সংসদীয় আসনের জন্যে এই চরিত্রকে হজম করতে হয় খালেদা জিয়ার মত একরোখা মানুষকে। ’আমি পুতের রাজনীতি করি নাকি যে তার মুক্তি চাইতে হবে?’ তারেক জিয়াকে নিয়ে তার এই বক্রোক্তি বিএনপির মত পরিবার ভিত্তিক দলের কোন পর্য্যায়েই আলোচনা সমালোচনা হয়নি। জনাব চৌধূরীরও জানা আছে তার শক্তির উৎস।
নির্বাচন কমিশনকে ঠাট্টার পাত্র বানাতে গিয়ে কিছুটা হলেও গ্যাড়াকলে আটকে গেছেন সা কা চৌ। কমিশনে নির্বাচনী ফর্ম পূরন করতে গিয়ে পূরানো সেই দম্ভোক্তির আদেলে বলে দিয়েছেন শিক্ষাগত কোন যোগ্যতা নাই। অথচ আগের নির্বাচনে উল্লেখ করেছিলে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে গ্রাজুয়েট। এই পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়ে নিজের শক্তিকেই শুধূ প্রকাশ করেন্নি, পাশাপাশি রাষ্ট্রের কাঠামোগত ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন এক ধরনের পশুশুলভ তৃপ্তি পাওয়ার জন্যে। এ ধরনের চ্যালেঞ্জে এ পর্য্যন্ত সাকা চৌধূরীরই জয় হয়ে আসছে। এই শক্তিশালী ব্যক্তির সংসদ সদস্যপদ বাতিল করা নিয়ে নির্বাচন কমিশন যে চ্যালেঞ্জে যাচ্ছে তাতে কমিশনের হার হতে বাধ্য। প্রথমত, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নতুন করে বিএনপিকে খোচাতে যাবেনা তাদের স্বার্থেই, দ্বিতীয়ত আওয়ামী লীগ নিজেও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ভক্ত নয়। ১/১১’র সরকারের আমলে জেলখাটা রাজনীতিবিদ্রা দলমত নির্বিশেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অবসান চাইছে তাদের চুরির খন্ডকালিন নিরাপত্তার জন্যে। এমন সরকারের পালটা হিসাবে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের কথা বলা হচ্ছে। সাকা চৌধূরীর কেস এই দাবির টেষ্ট কেস হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। এ কেস দিয়েই প্রমান হতে পারে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের দাবির ব্যাপারে সাংসদরা কতটা আন্তরিক।
সরকার ’৭১এর খূনীদের বিচার করতে যাচ্ছে, দেখার বিষয় এ ধরনের বিচারের হাত কতটা লম্বা হলে সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধূরীর মত আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিচারের আওতায় আনতে পারবে।