প্রথম দিনঃ (এসেছিল)
সরকারী বাস সংস্থা বিআরটিসির বাস রাস্তায় চলাচল করলে রাজশাহীতে বেসরকারী কোন বাস চলবে না, হুমকি দিল বেসরকারী লোকজন। রাস্তায় নেমে তুলকালম ঘটিয়ে ফেল্ল। সরকারী বাস জ্বল্ল, রাস্তায় যাকেই পাওয়া গেল তাকেই ধাওয়ানো হল, রিক্সা, সাইকেল, মোটর সাইকেল ভাংচুর হল। ডিসি সাহেব চটজলদি আদেশ করলেন, সরকারী বাস বন্ধ। বন্ধ হয়ে গেল বিআরটিসির বাস। বিজয়ীর বেশে ঘরে ফিরে গেল বেসরকারী-বিন-লাদেনের দল।
দ্বিতীয় দিনঃ (এসেগেছে)
সরকারী সংস্থার বাস চলতে না দিলে বেসরকারী কোন বাস চল্বে না রাজশাহীতে, ঘোষনা দিল শহরটির আমজনতা। রাস্তায় নামল তারা। ভেংগে দিল সামনে যা পাওয়া গেল, চিতার ক্ষিপ্রতায় ঝাপিয়ে পরে মিটিয়ে নিল ভাংচুরের ক্ষুধা। অনেকদিন হয়ে গেল সুস্বাদু এ আহার মুখে উঠেনি। বিজয়ীর বেশে ঘরে ফিরে গেল আমজনতা-বিন-লাদেনের বংশধর!
তৃতীয় দিনঃ (এখনও আসেনি)
বৈঠক বসেছে ফয়সালার। সরকারী, বেসরকারী এবং আমজনতা সবাই এক টেবিলে। টেবিলের তলায় লেনদেন হয়ে গেল কড়কড়ে কিছু কাগজ। থানার পুলিশ, ডিসি এসপি অফিসের হুজুরে আলার দল, পৌরসভার চেয়ারম্যান, সাংসদ সবাই মিলে কাচ্চি বিড়িয়ানি খেল, বিদায় বেলা সবাই হাত মেলাল। অনেকে বুকে বুক। থানা-পুলিশ-এসপি-ডিসি-বিন লাদেনের দল বিজয়ীর বেশে ফিরে গেলেন নিজ নিজ ডেরায়।
চতুর্থ দিনঃ (প্রতিদিনই এমন একটা দিন)
পত্রিকায় খবর বেরুল; রাজশাহীতে সরকারী বাস চলাচল লাভজনক নয়, সংস্থার লালবাতি জ্বলার অবস্থা। সবাই বিআরটিসির জানাজায় যাওয়ার প্রস্তূতি নিতে থাকল। জানাজার পর মুরগী মুসল্লামের ব্যবস্থা করেছে বেসরকারী-বিন-লাদেনের দল। সাথে থাকবে কড়কড়ে আরও কিছু কাগজ। ঈদ সামনে, সবারই বেতন-বোনাস চাই। আরও একবার থানা-পুলিশ-এসপি-ডিসি-বিন লাদেনের বংশধর বিজয়ীর বেশে ফিরে যাবেন কেউ নিজ ডেরায়, কেউ ঈদের জামাতে, কেউ জুম্মার নামাজ আদায়ে, কেউবা আবার ৪০ দিনের তবলীগি চিল্লায়।
এভাবেই বাংলাদেশের ৪টা দিন কেটে যায়। একে একে ৪টা মাস, ৪টা বছর এবং যোগ-বিয়োগ শেষে ৪টা যুগ!