হোক না তা অস্বাভাবিক অথবা অনৈতিক, কিন্তূ সময়মত এর সঠিক প্রয়োগ করা গেলে বাংলাদেশের আকাশ হতে বেশ কিছু কালো মেঘ দূর হয়ে যেতে পারে। একটু খুলেই বলি ক্যচালটা। গতকালই দেখলাম বংগবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১১জন শিক্ষককে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে দলীয় পরিচয়ের কারনে। সন্দেহ নেই পূর্ববর্তী সরকার তার দলীয় ঘরনার চিকিৎসকদের ন্যায় অন্যায়ের ধার না ধেরে নিয়োগ দিয়েছিল রোগীদের বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদের মন্ত্রে সাড়িয়ে তুলতে। নিয়োগ প্রাপ্ত এ সব চিকিৎসকদের জাতিয়াতাবাদী চিকিৎসার ফলে নিশ্চয় অনেক রুগী সূস্থ হয়ে একই ক্যাম্পে নাম লিখিয়েছে শহীদ জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে। অনেকে হয়ত অক্কা পেয়ে ইটারনাল জগতে বাস্তবায়ন করছে একই স্বপ্ন। সচিবালয়ে তালিকাভূক্ত করা হয়েছে বেশ কিছু সরকার বিরোধী ব্যুরুক্রাট এবং তাদের মাথায়ও ঝুলছে মৃত্যু পরোয়ানা। একই অবস্থা নিম্ন আদালত সহ দেশের হাইকোর্ট এবং সূপ্রীম কোর্টে। বাংলাদেশী বিদায় দিয়ে সেখানেও প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে বাংগালী জাতিয়তাবাদের অকুতভয় সেনাদের। জাহাংগীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগেও একই ফর্মূলা প্রয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে রাস্তা, ঘাট, বন, জংগল, দালান-কোঠা সহ পাবলিক শৌচাগারের নাম। বলা হচ্ছে, এ সবে প্রচন্ড বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদী গন্ধ, মৌলবাদীর ছোয়া এবং ডিজিটাল পৃথিবীতে এর কোন কোন ঠাই নেই।
আমাদের বুঝতে অসূবিধা হয়না সামনের নির্বাচনে ডিজিটালকে পরাজিত করে এনালগ ক্ষমতায় এলে উপরে বর্নিত সেনাদের কি হাল হবে। ড্যাবের মহাপ্রভূ সর্ব জনাব জাহিদ সাহেব বাংলাদেশী আপোষহীনা নেত্রীর সাথে একটা তালিকা নিয়ে বৈঠকে বসবেন। নেত্রী বলবেন, মার ঠেলা হেইও! এমন ঠেলায় বাংগালী জাতিয়তাবাদীরা হ্যামিলনের বংশীবাদকের(নেত্রী) পিছু নিয়ে ইদূরের মত হারিয়ে যাবে রাজনীতির গর্তে। হাইকোর্ট, সুপ্রীম কোর্ট সহ শৌচাগারেও আসবে জাতিয়তাবাদী পরিবর্তন। এনালগ সরকার হাউন্ড ডগ দিয়ে খুজবে বাংগালী তথা ভারতীর গন্ধযুক্ত ডিজিটালবাদীদের। জিয়া সেনাদের উল্লাসে পবিত্র হবে প্রায় ভারতের হাতে চলে যাওয়া মাতৃভূমি বাংলাদেশ।
আবার নির্বাচন আসবে। মান-অভিমান, লগি-বৈঠা, হরতাল-অবরোধ শেষে আবারও হয়ত ডিজিটালের জয় হবে। পাকিস্থানী গন্ধ মুছে ফেলতে নেত্রী আবারও হয়ত দৌড়াবেন আমেরিকায়, জাতির দৌহিত্র ভার্জিনিয়ায় বসে লিখতে থাকবে বাংলাদেশ মুক্তির নয়া ডিজিটাল প্রেশক্রিপশন। পাঠক, আপনিই বলুন এনালগ ভাইসাহেবদের ভাগ্যচাকা এ যাত্রায় কোন দিকে ঘুরবে!
ক্যাচাল ছেড়ে আসলা কথায় আসা যাক। এমনটা করলে কেমন হয়! বাংলাদেশের সবকিছুকে মাছ ভাগার মত দুই ভাগে ভাগ করলে এর ভাল-মন্দ কি হতে পারে আসুন একটু ভেবে দেখি। আবাসন খাতে টাইম শেয়ারিং বলে নতুন একটা টার্ম নয়া বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সারমর্ম হল; আপনি একটা ফ্লাট কিনবেন অথচ সে ফ্লাটে সাড়া বছর থাকার কোন সম্ভাবনা দেখছেন না। আপনার মত আরও একজন অথবা একাধিক ক্রেতা খুজে বের করুন। ৩জন মিলে ক্রয় করুন স্বাদের ফ্লাট, এবং ৩X৪=১২মাস এ অংকে ভাগাভাগি করে বাস করতে থাকুন। এ ধরনের আবাসন অবশ্য হলিডে স্পটগুলোর বেলায় ভাল কাজ করে। একই কায়দায় বাংলাদেশকেও যদি বাংগালী এবং বাংলাদেশীরা টাইম শেয়ারিং পদ্বতিতে শাষন করার সূযোগ পায় আমজনতার জন্যে বয়ে আনতে পারে কাংখিত স্বস্তি। ধরুন বাংগালী সরকার ক্ষমতা হতে বিদায় নিচ্ছে, নিয়ম অনুযায়ী সাথে বিদায় নেবে তার ডাক্তার, উকিল, বিচারক, পুলিশ, আমলা, শিক্ষক...সবাই। পাশাপাশি বদল হবে রাস্তা-ঘাট, দালান-কোঠা সহ দেশের পয়-প্রনালীর নাম। এরা যাবে ৩০ মাসের জন্যে, এ ৩০ মাস রাজত্ব করবে বাংলাদেশীর দল। সবাই লুটপাটের সমান সূযোগ পাবে, নেতা-নেত্রীর চরনে সমান অঞ্জলী অর্পন করা হবে। এ ভাবে ইতিহাসে অমর হয়ে থাকতে পারবে মালিকানা নিয়ে কাইজ্যারত দুই পরিবার। এর অন্যতম ভাল দিক হচ্ছে রাস্তায় কোন হাংগামা হবেনা, নির্বাচন নিয়ে পানিপথের যুদ্ব বাধবেনা, পার্লামেন্ট গরম করতে হবেনা, জ্বলাময়ী ভাষনের প্রয়োজন ইতিহাসে ঠাই নেবে। সবচেয়ে বড় কথাটা উল্লেখ করতে ভূলে যাচ্ছি, বাংলাদেশে বেকারত্বের সংখ্যা রাতারাতি ৫০ভাগ কমে যাবে। ঠাট্টার ছলে প্রস্তাবটা উড়িয়ে দেয়ার আগে আল্লাহর দোহাই লাগে, একবার, শুধু একবার, ভেবে দেখুন।