ব্লগারগন,
আপনাদের কি সৌভাগ্য হইয়াছে খবরটা পড়িবার? না হইয়া থাকিলে লিংকটা রাখিলাম, গুতা মারিয়া পড়িয়া লইবেন। আল্লহর দোহাই লাগে পড়িবেন। যাহারা অলস এবং গুতা মারিতে আলস্য বোধ করিয়া থাকেন তাহাদের জন্য সংক্ষেপে তুলিয়া ধরিলাম সংবাদটা।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় পুলিশের সহিত কথিত বন্দুক যুদ্বে নিহত নিরাপদ বৈরাগীর মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্য্যাদায় সৎকার করা হইয়াছে। ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফাউজুল কবীরের মতে ১০/১২ জন মুক্তিযুদ্বা এবং সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে এই পবিত্র কর্মটি সম্পন্ন করা হয়। ক্রসফায়ারের মত ’পবিত্র’ পর্বটি সমাধা করিয়া পুলিশ পবিত্র বাবুর মরদেহ স্থানীয় জনগণের হাতে তুলিয়া দেয়। দলিল দস্তাবেজ ঘাটিতে গিয়া জনগণ আবিস্কার করে নিরাপদ বৈরাগীর মুক্তিযুদ্ব কানেকশন। যথাযত সন্মান দেখাইতে জনগণ এই যোদ্বার মরদেহ জাতীয় পতাকা দিয়া মুড়াইয়া দেয়। বিগিউল বাজানো পর্বটা বাদ দিতে হয় অন্ধকার নামার কারণে। ওসি সাহেব জানাইলেন উপজেলা প্রশাষনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজন করা হয় সৎকার পর্ব। কাহিনীর এখানেই শেষ হইত যদিনা নিরাপদ বৈরাগীর মুক্তিযুদ্ব কানেকশন লইয়া কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক নিজে ভিন্ন কথা না বলিতেন। উল্লেখ্য, কমান্ডার নুরুল ইসলাম প্রদত্ত তালিকা ঘাটিয়াই বৈরাগীকে মুক্তিযুদ্বার সন্মান দেওয়া হইয়াছিল। হাটে হাড়ি ভাংগিয়া কমান্ডার ইসলাম ঘোষনা করিলেন, পবিত্র বৈরাগী চার দলীয় জোট সরকারের তালিকাভূক্ত ভূয়া মুক্তিযোদ্বা!
বেশ গোলমালের ব্যাপার, আসুন একটু সময় দিয়া বাহির করি আসল ব্যাপারঃ
১)পুলিশ বেআইনী পন্থায় হত্যা করিল নিরাপদ বৈরাগীকে। একই পুলিশ জাতীয় পতাকা মোড়ানো বৈরাগীর লাশ পাহাড়া দিল রাষ্ট্রীয় সন্মান দেখাইতে। বিস্ময়!
২)কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিকের তালিকায় ৩১ নাম্বারে পাওয়া গেল মুক্তিযোদ্বা বৈরাগীর নাম। একই মানিক ঘোষনা দিল বৈরাগী ছিল ভূয়া মুক্তিযোদ্বা। অবাক!!
আমরা যাহারা ছোলা ভূসী খাইয়া বড় হইয়াছি তাহাদের বুঝিতে অসূবিধা হয় নাই এইখানে কি ঘটিয়াছিলঃ
১)নিউ বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির চরমপন্থী সদস্য নিরাপদ বৈরাগীকে বিনা বিচারে গিলোটিনে পাঠানো হয় সরকারী সিদ্বান্তে
২)কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিকের তালিকার ৩১ নাম্বার নামটি ছিল বৈরাগীর। যেহেতু কমান্ডার মানিক এখন সরকার দলীয় সূবিধাভোগী প্রাক্তন মুক্তিযোদ্বা, তাই নিজের রুটি হালুয়া নিশ্চিত করিতে গিয়া নিরাপদ বৈরাগীকে ভূয়া মুক্তিযোদ্বা আখ্যায়িত করিতে বাধ্য হন।
৩)উপজেলা প্রশাষনে নিশ্চয় বিরোধী দলীয়রা ক্ষমতায়।
আমাদের সমাজে ভন্ডামীর রাজত্ব প্রশ্নাতীত, এমন রাজত্বের যাতাকলে নিষ্পেতিত হইতেছে আমাদের প্রতিদিনের বাচিয়া থাকা। ধোকাবাজী এবং মিথ্যাচারের শিকার হইয়া আমরা মানিতে বাধ্য হইতেছি মিথ্যাকে সত্য বলিতে, সত্যকে মিথ্যা বলিতে, এবং রাতকে দিন বানাইতে। আমাদের মুক্তিযুদ্বও ইহা হইতে রেহাই পাইবে এমনটা ভাবিবার কোন কারণ দেখা যাইতেছেনা। বাংলাদেশীরা ক্ষমতায় আসিলে এক ইতিহাস আবার বাংগালীরা আসিলে ঠিক উলটো কিছু। এই ভাবেই লেখা হইতেছে আমাদের ইতিহাস, ভূগোল, রাষ্ট্র বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, অর্থনীতি, পৌরনীতি সহ রাষ্ট্র এবং সমাজের সবকিছু। ক্রসফায়ার কায়দায় আমাদের বুদ্বি বিবেচনাকেও পাঠানো হইতেছে গেলোটিনের নীচে।
আমাদের দেশ কি হীরক রাজার হায় হাসান হায় হোসেন মার্কা রাজ্যে পরিনত হইয়াছে শেষ পর্য্যন্ত ? এই সব মিথ্যচার মানিতে মানিতে আমরাও কি শেষ পর্য্যন্ত মানষিক রুগী হইয়া যাই নাই? তাহাই যদি না হইয়া থাকে প্রশ্ন থাকিয়া যায়, রাষ্ট্রের সব্বোর্চ পর্য্যায় হইতে এমন ভন্ডামীর খবর প্রকাশ করিবার সাহষ আসে কোথা হইতে?