আমি মিয়া মোহম্মদ পাইজাম আলী। বয়স ৪৫, সাং নঁওগা জেলার পত্মীতলা, পেশা সিন্ডিকেটেড মলম সমিতির সহ সভাপতি, কর্মস্থল - ঢাকা রাজাশাহী রুটের এক্সপ্রেস বাস সমূহ। আত্মপক্ষ সমর্থনের সূযোগ না দিয়া আমাগোরে লইয়া বাংলাদেশের কাগজে কলমে গাবুইর্যা ক্যচাল চলে, তাই হাইকোর্টের মাজার মার্কা এই প্রচার মাধ্যমে নিজের কাহিনী লইয়া দুই চারডা কথা কইবার চাইতাছি। লেখার শুরুতেই সবাইকে চ্যালেঞ্জ দিয়া রাখতাছি, আমি মাইন্সের চোখে মলম হান্দাইয়া পকেট সাফ করি, পারলে আমারে ধইরেন!
এইবার আমাদের সমতি লইয়া কিছু কথাঃ- আমি এই সমতির সহ সভাপতি হইলেও এইডার সভাপতি যে কেডা তা আল্লাহ মালুম। ভূতের মত নিরাকার আমাদের সভাপতি, চোখে দেখা যায়না কিন্তূ টেকা পয়সার খবর হইলেই চারদিকে তেনার দুপদাপ আওয়াজ পাওয়া যায়। উনি আন্ধাইরে আহেন, টেকা পয়সা ছোঁ মাইর্যা আবার আন্ধারে মিলাইয়া যান। আমার অনেক চেলা চামুন্ডার আন্ধাজ, আমাদের সভাপতি আর গাবতলী বাস ষ্ট্যান্ডের ’বাংলাদেশ আসল শ্রমিক লীগের’ সভাপতি একাব্বর বয়াতী একই আদম। এইডা লইয়্যাও কানাঘুষা আছে, এক বছর আগে নাকি সভাপতির মসনদে আসীন আছিলেন একই ষ্ট্যান্ডের ’বাংলাদেশ আসল জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের’ সভাপতি সর্বজনাব মুগুর আলী দফাদার। একাব্বর আর মুগুর এক মার পেটের তালত ভাই, ভাগাভাগি কইর্যা মলমের ফসল ঘরে তোলে, নিজে খায় অন্যদেরও খাওয়ায়। এই তালত ভাইদ্বয়ের আসল ওস্তাদ ঢাকা শহরের হগল থানার ওসিরা। আমরা কষ্ট কাবারী কইর্যা মাইনষের চোখে মলম হান্দাইয়া দুই চারডা পয়সা কামাই আর এই ওসি শুয়রের বাচ্চারা আমাগোরে আটকাইয়্যা যা পারে তা কাইড়্যা নেয়, আবার একাব্বর আর মুগুরের থনেও ভাগ পায়। একবার এক ওসির লগে দেনা পাওনা লইয়া কাইজ্জা হইতেই বান্দীর বাচ্চা কইল ওস্তাদেরও নাকি ওস্তাদ আছে, তেনাদের আয় রোজগারের একটা ভাগ নাকি চইল্যা যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আজাইর্যা খাতুনের পেটিকোটের তলায়। মুগুর আলী কেচ্ছার ছলে একদিন কইছিল তেনার বড় বস নাকি পুরানা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আশরাফুজ্জামান তেন্দর আলী। বস আর মুগুর ভাই এক সময় নাকি একই সাথে ঢাকা-সিংগাপুর লাগেজ ব্যবসা চালাইতেন। বসেরা প্রেরাইভেট ভাবে কয়, মন্ত্রীগোও নাকি ওস্তাদ আছে যার পকেটে মাস শেষে আমাগো মলমের পয়সার একটা বিরাট অংশ চইল্যা যায়। নাউজুবিল্লাহ্! মন্ত্রীগো ওস্তাদের নাম এই বাজাইর্যা মুখে উচ্চারন করলে আসমান খইস্যা পরব, আর এই পাইজাম আলীরে মাইর্যা পাইজাম চাউল বানাইয়্যা ফেলাইব। ছোট মুখে বড় কথা মানায় না, তাই গ্রান্ড ওস্তাদের নাম শুনলে টাসকি খাইয়া থাকি। এই কথা আফনেগো লগে শেয়ার করছি ভূলেও উচ্চারন কইরেন্না, জানে মাইর্যা ফেলাইব।
এইবার আমাগো প্রডাক্ট লইয়্যা কিছু কথা; ভেজালের বাজারে সব চাইতে উত্তম ১নং গোবিন্দ মার্কা মলম আহে আমাগো মুক্তিযুদ্বের সহযোগী দেশ ইন্ডিয়ার থনে। বর্ডারের মালিক বিডিআর ভাইয়েগ কথা কি কমু, টেকা না দিলে হমুন্দির পুতেরা বিচিতে পর্য্যন্ত হাত দেয়, ইজ্জত লইয়া টানা হেছড়া করে। তেনাদের নাকি বর্ডারের ঐ পারের মালাউনগরেও ভাগ দেয়া লাগে, এ লইয়্যা প্রায়ই গোলা গুলি চলে। আমার ওস্তাদ কয় এই ভাগাভাগি লইয়্যা কয় মাস আগে বিডিআর হেডকোয়ার্টারে নাকি রক্তারক্তি হইয়্যা গেছে। আমরা ছোড খাট মানুষ তাই এত বড় সমস্যা লইয়া মাথা ঘামাইনা। বর্ডার পার হইতে গিয়া একবার এক বিডিআর বাবাজির লগে দুস্তি হইল, তিনি কইলেন বর্ডার হইয়া মলম পারাপারের কমিশনও নাকি ঢাকার বিভিন্ন অফিস আদালতে পাঠাইতে হয়। তেনারাও আমাগো একাব্বর আর মুগুর ভাইদের মতন, নিজে খায় আবার অন্যদেরও খাইতে সাহায্য করেন। এই বিরাট দুনিয়ায় আমরাই কেবল নাদান, খালি নিজেরাই খাই। কপালরে কপাল!!!
এইবার আহি যেই কারণে আফনেগো সামনে হাজির হওয়া সেই বিষয়ে;আমাগো দিনকাল বালা যাইত্যাছেনা, ১নং গোবিন্দ মলমে ভেজাল দেখা দেওয়ায় আয় রোজগারে আগের মত রমরমা অবস্থা নাই। তার উপর লীগের অত্যচার, দলের হুমকি, থানা পুলিশের ভয়, বিডিআরদের প্যাদানী - সব মিল্লা পুলাপান লইয়া উপাস করার মত অবস্থা। বউডা আবার পোয়াতী, বৌ বাচ্চাগো ঠিকমত খাওন দিতে পারিনা, চিকিৎসা নাই। অথচ আমাগো মলমী ফসলের আসল ভাগিদার সরাষ্ট্র মন্ত্রী জনাবা আজাইর্যা খাতুন কয়দিন আগে টাট্কির মধ্যে পিছলাইয়্যা কোমরে দুঃখ পান, চিকিৎসার লাইগ্যা তাইনে বেফানা হইয়্যা সিংগাপুর দৌড়ান। তাই বাজানগো কাছে এই অধমের একখান বিনীত নিবেদন, ঢাকা রাজশাহী এক্সপ্রেস বাসে মলমের শিকার হইলে দয়া কইর্যা চুপ কইর্যা থাইক্কেন। ভেজাল মলমে সাময়িক কাজ হইলেও আফনেরা আগের মতন মারা যাইবেন্না, তাই এই পাইজামদের পুলাপাইনদের দিকে চাইয়্যা ঘাপটি মাইর্যা থাইক্কেন। আমাগো বাল বাচ্চাদের দোয়া পাইবেন। আমাগোরে মাইর্যা কি লাভ, ক্ষমতা থাকলে আমাগো ওস্তাদদের গায়ে হাত দিয়েন। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়া কইতাছি আফনেরা তা পারবেন্না।