আট মাস আগে পদত্যাগ করা প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ দেশে ফিরছেন শেষ পর্য্যন্ত। মন্ত্রী এমপিদের কে দেশের বাইরে গেল আর কে ফিরে এল এ নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে হৈ চৈ হওয়ার কথা নয়। কিন্তূ সোহেল তাজের ব্যাপারটা একটু অন্যরকম। বনিবনা না হওয়ার কারণে সোহেল তাজ যথাক্রমে গত বছরের ৩১শে মে ও ১লা জুন দু’দফায় কেবিনেট হতে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের পর সংবিধান অনুযায়ী তাঁর পদ শূন্য বিবেচিত হয়ে থাকলে একই ব্যক্তি কোন অধিকারে ৮ই জুনের মন্ত্রীসভার বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তা এক বিরাট রহস্য। সবচেয়ে অবাক কান্ড পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হতে ব্যাপারটা যেমন খোলাসা করে হয়নি, একই ভাবে প্রেসিডেন্টের নির্দেষে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ হতেও জারি হয়নি কোন নোটিফিকেশন। এক কথায় মন্ত্রী সোহেল তাজ আদৌ পদত্যাগ করেছেন কিনা ব্যাপারটা পরিস্কার নয়। এ অবস্থায় দেশে ফিরে সোহেল তাজ মন্ত্রীত্ব দাবি করলে কি ধরনের পরিস্থিতি উদ্ভদ হতে পারে এ নিয়ে শুরু হয়েছে কথা চালাচালি।
কে এই সোহেল তাজ? ঢাকা জেলার কাপাসিয়া হতে আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচিত সাংসদের চাইতেও আমাদের কাছে তার পরিচয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের সন্তান হিসাবে। মরহুম তাজউদ্দিন আহমেদের কাছে আওয়ামী লীগ তথা জাতির অনেক দায়বদ্বতা। মুক্তিযুদ্বের অন্যতম সংগঠক এই নেতাকে জীবদ্দশায় আওয়ামী লীগ যথাযত মূল্যায়ন করেনি বলে অভিযোগ রয়েগেছে। যোগ্যতা হোক আর দায়বদ্বতা অবমুক্তির তাগাদা হতে হোক, প্রধানমন্ত্রী সোহেল তাজকে মন্ত্রী সভায় ঠাঁই দিয়েছিলেন একজন নির্বাচিত সাংসদ হিসাবে, যা নিয়ে অতিরিক্ত বিতর্কের কোন অবকাশ নেই। কিন্তূ সোহেল তাজকে নিয়ে বিতর্ক অন্য জায়গায়। তিনি প্রবাসী এবং বিদেশী স্ত্রী সহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন অনেকদিন ধরে। সাংবিধানিক সীমাবদ্বতা দূর করতে উনি কি যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা না নাগরিক এটাও জাতির সামনে পরিস্কার করা হয়নি।
কাকে মন্ত্রী পরিষদে ঠাঁই দেবেন ব্যাপারটা একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। একটা বাস্তবতা হয়ত আমাদের নেতা-নেত্রীরা ভুলে যান, মন্ত্রী পরিষদ দায়বদ্বতা অবমুক্তির প্লাটফর্ম নয়, এ হচ্ছে সরকারের আর্থ-সামাজিক কার্য্যক্রম বাস্তবায়নের অন্যতম হাতিয়ার। সোহেল তাজের মন্ত্রিত্ব নিয়ে ব্যক্তিগত এবং পরিবারিক মান অভিমানের যে সার্কাস জাতিকে উপহার দেয়া হয়েছে তা আবারও প্রমান করে আমাদের রাজনীতি কতটা নেত্রী ও পরিবার মূখী।