বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন মইন উদ্দিন আর একজন ফকরুদ্দিনের আগমন কতটা প্রয়োজন ছিল সময়ই তা প্রমান করবে। আজ হিসাবের মারপ্যাচে হাজারো আসমানী সমীকরনে চাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে পতিত রাজনীতির ঘন কালো অধ্যায়কে। গত ৩৮ বছর বাংলাদেশে রাজনীতি বলতে যা চর্চা করা হয়েছে তা কোন অবস্থায় রাজনীতির সংজ্ঞায় প্রতিস্থাপন করা যায়না, তা ছিল শুধুই পেট আর পকেটনীতির উলঙ্গ প্রদর্শনী। খালেদা জিয়া, এরশাদ আর হাসিনাকে যদি রাজনীতিবিদ আখ্যায়িত করা হয় তা হবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিবেদিত রাজনীতিবিদ্দের জন্য এক ধরনের অপমান। একজন অষ্টম শ্রেনী অকৃতকার্য গৃহবধুকে দল বাচানোর তাগিদে রান্নাঘর হতে টেনে এনে দেশ এবং রাস্ট্রকে বর্গা দেয়ার নাম রাজনীতি হতে পারেনা, তা শ্রেফ দেশ নিয়ে জুয়া খেলা। এবং এ তামাশা জাতিকে উপহার দিয়েছে একদিকে ইস্কান্দর, শামীম, তারেক, ককো, সৈয়দা তৈয়বার মত লুটেরা আত্মিয়দের, অন্যদিকে বাবর, হুদা, সিরাজ, মওদুদ আর লালু ভুলুদের মত হাজার হাজার প্রফেশনাল ডাকাতদের। চুরি আর লুটপাটের দৌড়ে পিছিয়ে পরে শেখ হাসিনা রাজনীতির নামে যা করেছিলেন তা ছিল লাগামহীন উন্মাদনা। লাগাতার হরতাল, লগি-বৈঠার তান্ডব আর আগুনে পুড়িয়ে বাস যাত্রীদের কয়লা বানানোর রাজনীতি কোন সূস্থ রাজনীতিবিদের মগজ হতে বেরুতে পারেনা। ছাউনির ডাকাত এরশাদ হচ্ছেন সেই রাজনীতিবিদ যাকে চুরির দায়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সাজা দিয়েছিল এবং তিনি সে শাস্তির মেয়াদ শেষে আবারও ফিরে এসেছেন খালেদা-হাসিনা রাজনীতির নিয়ামক শক্তি হতে। এর চেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে দ্বিতীয়টা খূঁজলে পাওয়া যাবে বলে মনে হয়না।
আজকে ছাত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলতে আমাদের সামনে ভেসে উঠে একদল এজিদ যারা হাতিয়ার নিয়ে একে অন্যকে ধাওয়া করছে, লাল নীল আর হলুদ রংধারী শিক্ষক যারা জ্ঞানের বদলে ছাত্রদের শিরায় ঢুকিয়ে দিচ্ছে সন্ত্রাষ, চাঁদাবাজি সহ দলীয় ভৃত্যগীরির ভয়াবহ বিষ। দেশের বিচার ব্যবস্থা দলীয় ভৃত্যদের পদচারনায় করা হয়েছে দলিত মথিত, আইনের শাষনকে বদলে দেয়া হয়েছে দলীয় শাসনে। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ভাগাভাগির দৌড়ে নিজকে বঞ্চিত ভেবে হাসিনা তার কুটচালকে আর্ন্তজাতিকায়ন করেছেন র্নিলজ্জের মত; ছেলে, মেয়ে, বোন এবং সহায়-সম্পত্তি সহ সব বিদেশে পাচার করে উনি বাংলাদেশকে বানিয়ে ফেলেছেন দুধালো গাভি। অপরাজনীতির এই ভয়াল থাবার কারনেই জাতি হিসাবে আমাদের পরিচিতি র্দুনীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসাবে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে অর্গানাইজড্ ক্রাইম সিন্ডিকেটের অপরনাম জামায়েত ইসলাম। এরা দাড়ি আর মুখে ইসলামী বুলির আড়ালে ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করছে তথাকথিত জেহাদের জন্যে। খালেদা জিয়ার অপশাষনকে পূঁজি করে তাকে সত্যিকার অর্থে পুতুল বানিয়ে ব্যবহার করে গেছে ক্ষমতার ৫টা বছর। এই ভয়াবহ দানব ইতিমধ্যে শাখা প্রশাখা বিস্তার করে এমন শক্তি সঞ্চয় করেছে যার মূল্য জাতিকে একদিন দিতে হতে পারে চরমভাবে।
চড়াই উৎড়াই শেষে দেশে আবারও ফিরে এসেছে কথিত গণতান্ত্রিক রাজনীতি। এখান হতে বাংলাদেশ কোন পথে যাবে তা বাংলাদেশীদেরকেই ঠিক করতে হবে। রাজনৈতিক ব্যর্থতার জড়ায়ূতে জন্ম নেয়া সময় এবং চাহিদার ফসল মউআ/ফউআদের বিচার নিয়ে মাতামাতির আগে রাজনীতিবিদ্দের উচিৎ আয়নায় নতুন করে নিজদের চেহারা দেখে নেয়া। তা হলে ভবিষতে নতুন ফকরুদ্দিন-মইনউদ্দিন গংদের উত্থানই শুধু ঠেকানো যাবেনা, পাশাপাশি নিজদের রক্ষা করা যাবে জেল-হাজতের কালিমা হতে। দেশে আইনের শাষন নিশ্চিত পূর্বক বিচার ব্যবস্থা দলীয় ভৃত্যদের হাত হতে মুক্তকরা গেলে রাজনৈতিক সুবিধায় অর্থনীতিকে ধর্ষন করার সাংস্কৃতি চীরতরে কবর দেয়া সম্ভব হবে। এমন একট সূস্থ বিচার ব্যবস্থায় শুধু রাজনীতিবিদ কেন মউআ/ফউআদের মত বন্দুক-কামানধারী অবৈধ ক্ষমতাসীনদেরও আনা যাবে আইনের আওতায়। এর নামই রাজনীতি, সূস্থ এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতি।