ভেতরের খবর হয়ত কোনদিনই বাইরে আসবেনা। অনেকেরই জানা তবু এ নিয়ে কেউ কথা বলবেনা। কারণ হীরক রাজ্যে কথা বলা নিষেধ। আমি শুনেছি এমন একজনের মুখ হতে চাইলেও যার কথা উড়িয়ে দেয়া যায়না। প্রিন্ট মিডিয়া এ নিয়ে কথা বলবে এমনটা আশা করা অন্যায়। কারণ ওরা সবাই বিক্রি হয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়া চাইলেও মধ্যরাতের রঙ্গিন সরকার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেনা। তাই যা বলার এখানেই বলছি। সত্য মিথ্যার দায় তাদের যারা কথা গুলোর জন্ম দিয়েছে।
কি ঘটেছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে? শুধু কি চাঁদাবাজি? নাকি ভেতরের খবর চাপা দেয়ায় চাঁদাবাজি ছিল একটা ষ্ট্যান্ট মাত্র? ছাত্রলীগ মানেই চাঁদাবাজি। চাঁদ-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র যেমন সত্য তেমনি সত্য এই দলের চাঁদাবাজি। এ নিয়ে কোথাও কোন রাখঢাক নেই। এ মুহূর্তে ছাত্রলীগ একটি জাতীয় দুর্যোগ। প্লেগের মত মহামারী রোগ। এ রোগের লালন কর্তার কি তা জানা ছিলনা? নিশ্চয় ছিল। কারণ চাঁদার জন্যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পর্যন্ত থাপড়াচ্ছে ছাত্রলীগারদের এমন 'মহান' কর্মের অসংখ্য ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজত্ব করছে। ওরা সিলেটের এক ছাত্রাবাস পুড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছিল চাঁদার দাবিতে। এর জন্যে কাউকে কি কোথাও জবাবদিহিতা করতে হয়েছে? বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে? বিশ্বজিৎ নামের এক হিন্দু যুবককে প্রকাশ্য দিবালোকে পশুর মত জবাই করে বীর-দর্পে মাঠ ত্যাগ করেছে। আদালতের ক্যাঙ্গারু ট্রায়ালকে কলা দেখিয়ে সমুন্নত রাখছে নিজেদের অধরা অছোঁয়ার ঐতিহ্য। অথচ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় চুনোপুঁটি কাউকে বলি না দিয়ে বলি দেয়া হলো পালের গোদা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে। সন্দেহটা এখানেই!
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে কত কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল তার সঠিক অংক কি আমরা জানি? আমরা না জানলেও তা জানতে পেরেছিল ঐ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগের নেতারা। এবং এও জানতে পেরেছিল বরাদ্দকৃত অংকের একটা বিশাল অংক হাওয়া হয়ে যাবে উইদাউট এনি ট্রেইস। তবে কোথায় এবং কোন স্বরলিপিতে এই অংক বাতাসে মেলাবে তা তাদের জানা ছিলনা। তাই গরু মরলে যেমন শকুন ভিড় জমায় তেমনি ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতারা ভিড় জমায় লুটপাটের ভাগাড়ে। ভাইস চ্যান্সেলর প্রমাদ গুনে বিপদের আগুন শুরুতে মাটি চাপা দেয়ার লক্ষ্যে ক্ষুধার্ত শকুনদের হাতে তুলে দেয় এক কোটি টাকা। বিপদের শুরুটা এখানেই। খবর চলে যায় শকুন দলের সর্দারদের কানে। বাংলাদেশ নামের গোভাগাড়ে নিজেদের হিস্যা বুঝে নিতে ওরাও পাড়ি দেয় জাহাঙ্গীর নগরে। এবং এ হিস্যা টাকার অংকে অনুবাদ করে তা পৌঁছে দেয় যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে। ৮৬ কোটি মাত্র!
বলাহয় টোটাল প্রকল্পটায় জড়িত ছিল তিন বান্ধবী। একজন রূপকার, অন্যজন সুরকার এবং বাকি-জন গায়ক। কথা ছিল কেউ জানবে না, টের পাবেনা। অনেকটা অদৃশ্য হয়ে বিদেশে পাড়ি জমাবে। ভাগাভাগি যা হওয়ার তা হবে ওখানেই। মাঝখানে বখড়া দেয় ছাত্রলীগ। লোকাল নেতাদের ম্যনেজে করা গেলেও উপরে নেতাদের দাবির অংক ছিল এত বেশি যা মেটানো ভিসির পক্ষে সম্ভব ছিলনা। ভিসি দ্বারস্থ হন রূপকার ও সুরকারদের দ্বারে।
বাকিটা সবার জানা।
হতেপারে উপরের ঘটনার সবটাই বানানো গল্প। প্রতিহিংসার প্রতিফলন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশ হতে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। জমা হচ্ছে বিদেশী ব্যাংকে। ওখানে কেউ বাড়ি বানাচ্ছে। কেউ ব্যবসা করছে। রাতারাতি ফুলে ফেঁপে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে। পদ্মাসেতুর লুটপাটে ধরা না খেলে ওখান হতেও অদৃশ্য হয়ে যেত হাজার কোটি। যেমনটা হয়েছে স্যাটেলাইট প্রকল্প সহ শত শত প্রকল্প হতে। আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা কি ঘটেছিল বাংলাদেশ ব্যাংকে। এবং এও ভুলে গেলে চলবেনা কোন লুটপাটের বিচারই আলোর মুখ দেখেনি।
এবং দেখবেও না। কারণ এসব লুটপাটে ভগবানদের আশীর্বাদ থাকে।