ইংল্যান্ড ৪ ইউক্রেন ০
ফুটবল খেলা দেখা হয়না অনেদিন। বিশেষকরে লাইভ। পৃথিবীর এ অংশে ফুটবল তেমন জনপ্রিয় না। ফুটবল বলতে এদেশে সবাই আমেরিকান ফুটবল বুঝে থাকে। ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার কোটি কোটি মানুষ যে ফুটবলকে ভালবাসে তা এখানে সকার নামে পরিচিত।
ছুটির দিন, তাই টিভি চ্যানেল ঘুরাচ্ছিলাম বো বো করে। এক জায়গায় এসে আটকে গেলাম। ইউরো কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল...লাউভ। খেলার প্রথমার্ধ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। দুদল তৈরী হচ্ছে মাঠে নামার। শুরু হবে দ্বিতীয়ার্ধ্বের খেলা। ইংল্যান্ডে ১-০ গোলে এগিয়ে।
ইউক্রেইনে এক বছর কাটানো আর দুর্বলের প্রতি আজীবনের সমর্থনের কারনেই হয়ত ইউক্রেইনের পক্ষ নিয়ে সোফায় শক্ত হয়ে বসলাম। কমেন্ট্রি হচ্ছে স্প্যানিশ ভাষায়...
কিন্তু হায়, বসার কয়েক মিনিটের মাথায় নির্ধারিত হয়ে গেল খেলার ফলাফল। গুনে গুনে ৩ট গোল হজম করে ফেললো ইউক্রেইন। হতাশ হলাম। তবে খুব একটা না।
ইংল্যান্ড হচ্ছে ফুটবলের জনক। ওদের মাটি হতেই খেলাটার শুরু। খেলাটাকে প্রফেশনাল করে এ পর্যন্ত নিয়ে আসতে দেশটার ভূমিকা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। ইংল্যান্ডের পাশাপাশি ইতালি, স্পেইন, জার্মানী ও ফ্রান্স অঢেল অর্থ বিনিয়োগ করে খেলাটাকে নিয়ে গেছে এমন এক উচ্চতায় যেখা্ন হতে এর বেনিফিট ভোগ করছে বাকি বিশ্ব।
সেনেগালের গহীন কোন পাড়াগায়ের শিশু বড় হয়ে স্বপ্ন দেখতে পারে ইউরোপের বড় কোন দলের হয়ে খেলার। সুযোগ পেলে এসব খেলা তাদের এনে দিতে পারে নাম, খ্যাতি ও অর্থ।
তাই ইউক্রেইনের মত ছোট কোন দল ফুটবলের রাজা বাদশাদের আচমকা পরাজিত করলে সাময়িক কিছু সন্তুষ্টি ভোগ করলেও দিন শেষ ফুটবল হেরে যায়। আজকের খেলায় ইউক্রেইন জিতলে হয়ত এমন কিছুই হতো। কিন্তু হয়নি!
ইউক্রেইনের ফুটবল বলতে এখানো বুঝি আলেগ ব্লোখিন আর ভিক্টর চানভের কিয়েভ ডায়নামো। সময় বদলে দিয়েছে অনেক কিছু। কিয়েভ ডায়নামো হয়ত এখনো আছে, কিন্তু নেই সোভিয়েত দেশ। এক কালের সোভিয়েত এখন অনেকটা রুশ দেশে সীমাবদ্ধ। জানতে ইচ্ছা করে, যখন তাদের এক কালের সগোত্রীয় ইউক্রেইন ইংল্যান্ডের মত দলের বিরুদ্ধে মাঠে নামে রুশরা কি প্রতিবেশীদের সমর্থন করে? হাজার হলেও দুই দেশ এখন একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত!
যাই হোক, হেরে গেলেও কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত আসাটাও ছিল বড় সাফল্য। অভিনন্দন
ইংল্যান্ডের দিকে গেলেও মন সব সময় পরে থাকবে সোভিয়েত ইউনিয়ন হতে বেরিয়ে আসা দেশ গুলো দিকে। ফুটবলের মাঠও এর বাইরে নয়।