খণ্ড খণ্ড কিছু ঘটনা, কিছু খবর, কিছু তথ্য ও বাস্তবতা এক সূতায় গাথার চেষ্টা করলে ঘোলাটে হলেও একটা ছবি দাঁড় করানো যাবে। আসুন সে চেষ্টাটাই করি।
১) খুনের ৪৮ ঘণ্টার ভেতর কালপ্রিটদের জনসম্মুখে হাজির করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী।
- ৪৮ ঘণ্টা কেন, একে একে ৪৮ দিন, ৪৮ মাস পেরিয়ে গেল। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ৪৮ বছরেও উৎঘাটিত হবেনা এ হত্যা রহস্য।
কিন্তু কেন? কি এমন ঘটনা ঘটেছিল সেদিন, অথবা কে এমন শক্তিশালী খুনি যাকে ১০ বছরেও ট্রেস করা যায়নি?
২) কদিন আগে ইজি বাইকের চালক সেজে এক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উৎঘাটনের দাবি করেছে লোকাল পুলিশ
- ২০১২ সালে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের জট আজও খুলতে পারেনি একই পুলিশ। অথচ চাইলে তারা যে কোন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উৎঘাটন করতে সক্ষম তার প্রমাণ ভুরি ভুরি।
এ হত্যাকাণ্ড ছিল স্মরণকালের ভয়াবহ নির্মম হত্যাকাণ্ড। রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছিল নিহতদের ঘরে। কোথাও না কোথাও আঙ্গুলের ছাপ, রক্ত অথবা নখে খুনিদের ডিএনএ থাকার কথা। এসবের কোন কিছুই কি পাওয়া যায়নি? এও কি আমাদের বিশ্বাস করতে হবে?
৩) দুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের কথিত আইনমন্ত্রী ও জনৈক দরবেশ বাবার ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। আলাপের এক পর্যায়ে আমরা পরিচিত হয়েছি জনৈক শক্তিধর ব্যক্তির সাথে। এই ব্যক্তির প্রকল্প নিয়ে চিন্তিত ছিলেন আলাপরত মন্ত্রী ও দরবেশ। কথোপকথন হতেই বুঝা যায় আইন মন্ত্রী আর শেয়ার মার্কেট লুণ্ঠনকারী দরবেশ বাবার চাইতে হাজার গুণ শক্তিশালী তৃতীয় ব্যক্তি।
- হত্যাকাণ্ডের পরও কথা উঠেছিল তৃতীয় এই শক্তিধর মানুষটাকে নিয়ে। নিন্দুকেরা নিন্দা করতে গিয়ে বলেছিল জনৈক এলাহি ও রহস্যময় শক্তিশালী ব্যক্তির মাল্টাই মিলিয়ন ডলার এনার্জি প্রকল্পের অনেক গোপন তথ্য জেনে গিয়েছিল নিহত দুই জন। তাদের সরানোটা ছিল জরুরি।
আমার সব মায়া মেঘের জন্যে। একজন শিশু সামনে হতে দেখেছে মা বাবার খুন। হয়ত রক্তের বন্যায় ক্ষণিকের জন্যে গড়াগড়ি খেয়েছিল। এমন দৃশ্য বলিউড সিনেমায় আনতেও দ্বিধায় পরবে চিত্র নির্মাতারা।
অথচ বাংলাদেশের খোদ রাজধানীতে ঘটে গেছে এই ঘটনা। যেন কেউ কিছু দেখেনি। দেখা দেখি দূরে থাক, দশ বছরে পুলিশ/র্যাব তদন্ত রিপোর্ট পর্যন্ত জমা করতে পারেনি। কম করে হলেও ৮০ বার পিছিয়েছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ।
কানেক্ট দ্যাা ডটস এন্ড ইউজ ইউর ইমাজিনেশন... কলম তুলি নিয়ে আসুন একটা ছবি আঁকি।...নিজকে কিরীটী রায়ের চেয়ারে বসিয়ে উপসংহার টানার চেষ্টা করি...
একটা ব্লাডি মার্ডার দশ বছরে ৮০ বার পিছিয়েও যার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া যায়না।
খুন হওয়া দুজনেই সাংবাদিক। অথচ সহকর্মীদের মার্ডার নিয়ে মেইন স্ট্রীম মিডিয়া একেবারে বোবা।
খুন হওয়া দুজনের বাস এমন এক দেশে যেখানে বিশেষ ব্যাক্তি বিশেষ পরিবারের বিরুদ্ধে মুখ খুললে মানুষ গুম হয়ে যায়। উইদআউট ট্রেইস লাশ হয়ে মিহি বাতাসে মিলিয়ে যায়। দুজনের বাস এমন এক দেশে যে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্ট চুরি হলে কেউ কথা বলেনা। স্তব্ধ হয়ে যায় বিশ্বব্রহ্মাণ্ড।
রঙ ও তুলির মুনশিয়ানা শেষে আপনি যার ছবি পাবেন সে ছবির জনই আসল খুনি। সাগর রুনি কেবল খুন হওয়া দুজন সাংবাদিকই নন, বরং গোটা বাংলাদেশ খুন হওয়ার এক রক্তাক্ত অধ্যায়।
আসুন অপেক্ষায় থাকি এমন একটা দিনের যেদিন মেঘ তার মা-বাবার খুনিদের আঙ্গুল উঁচিয়ে চিহ্নিত করতে পারবে।