ভারতীয় ক্রিকেট অথবা দেশটার যে কোন খেলাকে ঘিরে বাংলাদেশিদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভারতীয়রা খেপেছে। এবং প্রায় সবারই একটা যুক্তি, '''আমারা ওদের স্বাধীন করে দিলাম, অথচ এখন ওরা আমাদের পরাজয়ে উল্লাস করে'''। ব্যপারটা আসলেই ভেবে দেখার বিষয়। বিশেষকরে ভারতীয়দের।
৭ই অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণকে অনেকে সমস্যার সূত্রপাত হিসাবে বিবেচনা করতে ভালবাসেন। তাদের ভাষ্য, ওরা তো (গাজা-বাসী) শান্তিতেই ছিল, তাহলে ইসরায়েল আক্রমণ করে কেন এই বিপদ ডেকে আনল! এখানেই আসে লজিক্যাল কোশ্চেন, সমস্যার শুরু আসলেই কি ৭ই অক্টোবর ছিল? নাকি ৭৫ বছর আগে একটা জাতিকে তার বাসভূমি হতে উৎখাত করে যেদিন ইউরোপিয়ান অভিবাসীদের জন্যে স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছিল তখন হতে? ইতিহাস ঘাঁটলে এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
১৯ নভেম্বর ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত পরাজিত হওয়ায় বাংলাদেশিদের অনেকেই আনন্দ উল্লাস করেছিল। কথিত এই ভারতীয় বিদ্বেষের শুরুটা কি ঐ দিনই শুরু হয়েছিল? নাকি এর গোঁড়া আরও গভীরে, যার শুরুও হয়েছিল অনেক আগে?
আন্তর্জাতিক সব আইন অমান্য করে ক্রিকেট ফাইনালে পরাজিত ভারত উজান হতে আসা পানি আটকে দিয়ে গোটা বাংলাদেশকে ঠেলে দিয়েছে মরুকরণ প্রক্রিয়ায়।
বাংলাদেশের অর্থনীতির কোন একটা সেক্টর মাটির গভীরে ঢুকে ভীত কিছুটা শক্ত করার চেষ্টা করলে জল, স্থল, অন্তরীক্ষ হতে ভারতীয়রা অনুপ্রবেশ ঘটায় তাদের পণ্য। আঁতুড়ঘরে মৃত্যু ঘটায় বাংলাদেশিদের প্রচেষ্টা। এ তালিকা হতে বাদ যায়নি, হালকা ও ভারী শিল্প, সূতা ও কাপড় খাত, পোলট্রি ও ফিশারিস শিল্প। এভাবে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে মুখাপেক্ষী করে রেখেছে তাদের পণ্যের।
আমার মত বাংলাদেশিদের একটা বিরাট অংশের ভারত বিরোধিতার অন্যতম কারণ হচ্ছে দেশটার রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও কর্তৃত্ব। আমাদের নির্বাচনে তাদের পছন্দের মানুষ ও দল ক্ষমতায় আসাটা যেন বাধ্যতামূলক। এ কাজ করতে গিয়ে ওরা আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে ফেলেছে। জন্ম দিয়েছে ঘরে ঘরে বৈরিতা। কোটি খানেক মানুষ আজ ঘরছাড়া তাদের দালাল সরকারের নিপীড়ন হতে বাচার জন্যে।
এক ক্রিকেটের জন্যে বাংলাদেশিরা 'অকৃতজ্ঞ' হয়ে গেছে এমনটা যে সব ভারতীয়রা ভেবে থাকেন তাদের অনুরোধ করবো এই সংস্কৃতির ভেতরটা একটু খতিয়ে দেখতে।