বাস্তবতা হচ্ছে তিনি পালিয়েছেন। এবং চোরের মত।
পিছনে ফেলে গেছেন বিরামহীন লুটপাটের অভয়ারণ্য। যাওয়ার প্রাক্কালে বিদায় হজ্বের বাণীর কায়দায় দেশবাসীর জন্যে কিছু একটা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাধ সাধে সেনাবাহিনী। সর্বসাকুল্যে ৪৫ মিনিট সময় দেয় গাট্টি-বোস্কা গোটানোর জন্যে।
সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে চড়ে হিজরত করতে চেয়েছিলেন প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গে। সেখানেও বাধা। বাধ সাধেন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এই সেই ব্যানার্জী যাকে পূজা-পর্বণে আমটা, ইলিশটা, বেনারসি শাড়িটা পাঠিয়ে বন্ধুত্বের মঙ্গল প্রদীপ জ্বালাতেন।
পশ্চিমবঙ্গে ঠাঁই না পেয়ে আরও ২/১ জায়গা ঘুরে শেষ ঠিকানা হয় উত্তর প্রদেশের কোন এক বিমান বন্দর। আশা করেছিলেন চাওয়া মাত্র বাহককে দিতে বাধ্য থাকবে কায়দায় ভারতের আশ্রয় পেয়ে যাবেন।
পতিত স্বৈরাচারদের কেউ ঘরে তোলেনা, এক সময়ের দাপটশালী ইরানের শাহ রেজা পাহলভিও ক্ষমতা হারিয়ে ভিক্ষুকের মত দুয়ারে দুয়ারে ধর্না দিয়েছিলেন আশ্রয়ের জন্যে। পাহলভি পরিবারের ধর্মীয় বাবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিমিষে চোখ উলটে ফেলেছিল।
শোনা যায় ভারতও নাকি বাংলাদেশের পতিত স্বৈরাচারকে স্থায়ী আশ্রয় দিতে অস্বীকার করছে। ব্রিটেন ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে এসব উটকো ঝামেলা নিতে তারা রাজি নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৈরিতা অনেকদিনের। তাই ওখানে তিনি আশ্রয় পাবেন সে আশা একেবারে শূন্য। যেতে পারলে অবশ্য ভালই হতো। ওদেশে ছেলে থাকেন, যার ব্যাংকে অনেক টাকা। অনেকের মতে পুত্র জয়ের হাতে ৩ হতে ১০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আছে। মত স্বাধীনতার পুণ্য ভূমিতে বাস করে চেতনার দুর্গন্ধ ভালই ছড়াতে পারতেন। তবে সে সম্ভাবনা এখন মৃত।
তিনি দৃশ্যপট হতে বিদায় নিয়েছেন, কিন্তু পেছনে রেখে গেছেন রক্তের প্লাবন। মায়ের বুক খালি করেছেন, সন্তানকে করেছেন পিতা হারা, ভাইকে করে গেছেন ভাই হারা। এ জাতির রক্তে প্রতিশোধের সামন্যাতম স্পৃহা বেঁচে থাকলে শেখ পরিবারের কবর ইতিমধ্যে রচিত হয়ে গেছে। এখন শুধু ঐ কবরে কাবলিদের মত লাঠিপেটা করা বাঁকি।