আমেরিকান শাসনব্যবস্থা দেশটার এক্সিকিউটিভ, লেজিশ্ল্যাটিভ ও জুডিশিয়াল ব্রাঞ্চের সমন্বিত কার্যক্রমের সুসম ফসল। এখানে এক ব্রাঞ্চকে পাশ কাটিয়ে অন্য ব্রাঞ্চ এমন কিছু করতে পারেনা যা শাসনব্যবস্থায় মৌলিক কোন পরিবর্তন আনতে পারে। এমনকি সাধারণ একটা বিল পাশ করতে চাইলেও তা কংগ্রেসের দুই চেম্বার ও প্রেসিডেন্টের অনুমোদন নিতে হয়। এই তিন পক্ষের যে কোন পক্ষ চাইলে আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারে অন্য পক্ষের সিদ্ধান্ত।
আমেরিকান লেজিস্লেটিভ সিস্টেমে যে কোন বিলের সূত্রপাত হয় হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে। এ মুহূর্তে হাউসের নিয়ন্ত্রনে আছে ডেমোক্রেটরা। ওখানে পাশ হলে বিল যায় কংগ্রেসের অন্য চেম্বার সিনেটে। ওখানে মেজোরিটি রিপাব্লিকানদের। হাউসে পাশ হওয়া বিলের উপর সিনেটে আলোচনা হয়। সিনেট কর্তন বর্ধন পূর্বক তৈরী করে বিলের নিজস্ব ভার্সন। এবং পাশ হওয়া সে বিল ফেরত যায় হাউসে। কংগ্রেসের দুই চেম্বারে বিল নিয়ে শুরু হয় টাগ অব ওয়্যার। অবশ্য দুই চেম্বারেই যদি এক দলের মেজোরিটি থাকে, এমন লড়াই সম্ভাবনা থাকে খুবই কম। কংগ্রেসের দুই চেম্বার একমত হলে বিল যায় এক্সিকিউটিভ ব্রাঞ্চের নির্বাহী দেশটার প্রেসিডেন্টের কাছে। প্রেসিডেন্ট বিলে সই করলেই সে বিল স্বীকৃতি পায় দেশের ল অব দ্যা ল্যান্ড হিসাবে। এখানে চাইলে প্রেসিডেন্ট সই করতে অস্বীকার করতে পারেন। যা হবে প্রেসিডেন্টের ভেটো ক্ষমতার প্রয়োগ। এই ভেটোকেও বাতিল করা যায় যদি কংগ্রেসের দুই চেম্বারের অধিকাংশ সদস্য যোগ দেন এই প্রচেষ্টায়।
আমেরিকান প্রেসিডেন্ট চাইলে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে এককভাবে আইন পাশ করতে পারেন, যা হবে প্রেসিডেন্টের এক্সিকিউটিভ পাওয়ারের প্রয়োগ। এমন আইন চ্যালেঞ্জ করা যায় ফেডারেল কোর্টে। ফেডারেল কোর্টে ব্যার্থ হলে যাওয়া যায় সুপ্রীমকোর্ট পর্যন্ত।
ডোনান্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির আগ পর্যন্ত অনেকটা নির্বিগ্নেই চলছিল তিন চেম্বারের যৌথ শাসন। তর্ক বিতর্ক সবই ছিল। ছিল দলীয় বিভাজন। এমনকি পারস্পরিক ঘৃণা। কিন্তু দিনশেষে সবাই ছিল গনতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর শ্রদ্ধাশীল। ট্রাম্পের পার্থক্য এখানেই। তিনি এসব মানতে রাজী নন। তিনি প্রেসিডেন্ট, বাকি সবাই তার তাবেদার, এমনটাই ট্রাম্প মেন্টালিটি। এমনকি তিনি আশা করেন, সুপ্রীমকোর্টের বিচারকরাও তার আদেশ নির্দেশ মানতে বাধ্য।
৩য় পর্ব আসছে।