গ্রান্ড ক্যানিয়নঃ
৫৪ লাখ বছর আগে আরিজোনা অংগরাজ্যের কলোরাডো নদীকে ঘিরে গ্রান্ড ক্যানিয়নের সৃষ্টি। ক্যানিয়নের দৈর্ঘ্য ৪৪৬ কিলোমিটার এবং ক্ষেত্র বিশেষে এর প্রসস্ততা ৭ হতে ২৯ কিলোমিটার পর্য্যন্ত। উচ্চতা প্রায় ২ কিলোমিটার। ইউরোপীয় অভিবাসীদের আগমনের পূর্বে আমেরিকান আদিবাসীরা ক্যনিয়নের গুহা গুলোকে নিজদের আবাস হিসাবে ব্যবহার করত। বলা হয়ে থাকে স্পেনিশ সেনা সদস্য গারর্সিয়া লোপেজ দ্যা কারদেনাস ১৫৪০ সালে প্রথম বারের মত গ্রান্ড ক্যানিয়নকে ইউরোপীয়ানদের জন্যে আবিস্কার করেন। প্রেসিডেন্ট থেওডোর রুজভেলট গ্রান্ড ক্যানিয়ানকে সংরক্ষিত ন্যশনাল পার্ক হিসাবে ঘোষনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
গ্রান্ড ক্যানিয়নের বিশালতা এবং এর দিগন্ত বিস্তৃত সৌন্দর্য্য কলম দিয়ে বর্ণনা করতে হলে থাকা চাই প্রকৃতি পাগল জাদরেল লেখকের গুন। আমি তেমন কেউ নই, তাই এর বর্ণনা সামান্য কিছুতেই সীমাবদ্ব রাখলাম । এ যেন প্রকৃতি এবং মানুষের সহাবস্থানের অন্তহীন সিম্ফোনী, যেন স্তব্দতার জালে আছন্ন এক স্বপ্নপূরী, যার শুরু এবং শেষ নিয়ে শুধু কল্পনা করা যায়, দেখা পাওয়া যায়না। স্লো মোশনে উড়ে যাওয়া চীলগুলোর দিকে তাকালে মনে হবে পৃথিবীটাও যেন পদানত এই পাখীগুলোর ডানার কাছে। যতদূর চোখ যায় শুধু ধূসর লালের মেলা, মাঝে মধ্যে হাল্কা মেঘ এসে গ্রাস করে নেয় ক্যনিয়নের চূড়াগুলো। এক একটা চূড়া মনে হবে তাজমহল, কুতুব মিনার, বৌদ্ব অথবা খ্রীষ্টানদের উপাসনালয়। এবং এদের সংখ্যা লাখ লাখ। সবচেয়ে দামী মুহুর্তটা বিমূর্ত হয়ে ধরা দেয় সূর্য্যাস্তের সময়। রক্তিম সূর্য্যের বিদায়ী আভা গ্রাস করে নেয় ক্যানিয়নের গভীরতা, মনে হবে কেউ যেন কোটি কোটি প্রদীপ জ্বালিয়ে উপাসনায় বসেছে। এ শুধু দেখার জিনিষ, অনুভব করার জিনিষ, বলার জিনিষ নয়। হাজার হাজার পর্য্যটক প্রকৃতির এই নয়নাভিরাম দৃশ্য ফ্রেমে আটকানোর জন্যে চাতক পাখীর মত অপেক্ষায় থাকে সাড়াটা দিন।
বেলা গড়িয়ে রাতের আধার গ্রাস করে নিল সবকিছু। এবার ফেরার পালা।