বিচারের নৌকা পাহাড় বাইয়্যা যায়!

Submitted by WatchDog on Saturday, October 24, 2009

WatchDog

বিচারে বিচারে সায়লাব হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এক বিচারের শুরু না হতেই জন্ম নিচ্ছে নতুন বিচারের পটভূমি। যুদ্বাপরাধী ও রাজাকার বিচার, শেখ মুজিব হত্যা বিচার, জেল হত্যা বিচার, গ্রেনেড হামলা বিচার, ১০ ট্রাক অস্ত্র আমদানী বিচার, বিডিআর ম্যসাকার বিচার, জেএমবি বিচার, চিনি ঘাপলাবাজীর বিচার, এবং এ তালিকার সর্বশেষ সংযোজন সাংসদ এবং শেখ পরিবারের অন্যতম সদস্য ফজলে নূর তাপস হামলা বিচার। এ সরকারের মেয়াদান্তে এ ধরনের বিচারের তালিকা কতটা দীর্ঘায়িত হবে তা সহজেই অনুমেয়। ইতিমধ্যে সরকারের বয়স প্রায় এক বছর হতে চল্‌ল, বহু বিচারের প্রতিশ্রুতিবদ্ব এ সরকার ক’টা বিচারের হালখাতা করতে পেরেছে তা যাচাইয়ের সময় হয়েছে বল্‌লে অন্যায় কিছু বলা হবেনা।

উচ্চ আদালতে শেখ মুজিব হত্যা মামলার শুনানী ছাড়া বাকি কোন মামলার তেমন অগ্রগতি হয়েছে বলে কোন খবর পাওয়া যায়নি। নির্বাচন প্রাক্কালে বাংলাদেশের অলিগলিতে যুদ্বাপরাধী বিচার দাবীতে সোচ্চার ব্যক্তি এবং সংগঠনগুলোও ভোজবাজির মত হাওয়া হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। সেক্টর কমান্ডার ফোরামের একজনকে মন্ত্রীত্ব দিয়ে কবর দেয়া হয়েছে এ সংগঠনের। যুদ্বাপরাধীদের বিচার দূরে থাক, এ অপরাধে কারা অপরাধী তাও এখন পর্য্যন্ত ঠিক করা যায়নি। আগামী চার বছরে এ বিচারের দৌড় কতদূর এগুবে তার হিসাব কস্‌তে গনিতে পন্ডিত হওয়ার দরকার পরবেনা আশাকরি। অন্যদিকে ক্ষমতাহারা দলের নেত্রী গতকাল ঘোষনা দিয়েছেন মেয়াদের আগেই সরকারকে বিদায় নিতে হবে! এ কথা আমাদের সকলেরই জানা বর্তমান সরকারকে হটিয়ে আগের সরকার ক্ষমতায় এলে উল্লেখিত বিচারের তালিকা উলটোমূখী পথ ধরবে। শাহরিয়ার রশীদ এবং ফারুখ রহমানের মত স্বঘোষিত খুনীরা মনের আনন্দে আরও ৫টা বছর জেলে বসে সরকারী অর্থের শ্রাদ্ব করবে। দুঃখজনক হল, রাজনীতি থেমে থাকবেনা এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতা হারিয়ে আবারও ফিরে যাবে রাজপথে, যুদ্বাপরাধী বিচারের দাবিতে তৈরী করবে নতুন মানব বন্ধন, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম মুক্তিযুদ্বের কাহিনী শুনিয়ে আবারও আন্দেলিত করবে আমাদের নরম অন্তর। ভোট আসবে, আমরা ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আবারও ফিরিয়ে আনব কথিত মুক্তিযুদ্বের স্বপক্ষের শক্তি।

কতদিন চলবে এই চক্র? কতদিন চলবে বিচারের ধাপ্পা দিয়ে ক্ষমতা আরোহনের এই নোংরা রাজনীতি? রাজনীতির অর্থ শুধূ ইতিহাস নিয়ে জুয়া খেলা নয়, আমাদের রয়ে গেছে একটা বর্তমান যেখানে ধুকে ধুকে মরছে ১৫ কোটি আদম। দেশ আইনের শাষন হতে কোটি মাইল দূরে, র্দুনীতির চ্যম্পিয়নশীপটা আবারও জেতার দাড়প্রান্তে আমরা, চাকরীর বাজার এখন কারবালার মাঠ, টেন্ডারবাজী আর চাঁদাবাজীর সূনামীতে তলিয়ে গেছে বাংলাদেশের মাঠ ঘাট। আমাদের রাজনৈতিক এজেন্‌ডাতে কোনদিনই কি ঠাই পাবেনা বর্তমানকে মেরামত করার অর্থনৈতিক কর্মসূচী?

প্রধানমন্ত্রী সুইডেন গেছেন গরম বায়ুমন্ডল ঠান্ডা করার দাবী নিয়ে। দলীয় মোসাহেবদের অতিথি হয়ে কাটাচ্ছেন স্বপ্নের সুসময়। বিশ্ব মন্ডলের উত্তপ্ত বায়ু ঠান্ডা করার আগে দেশের বায়ু ঠান্ডা করার প্রতিশ্রুতি কি ইতিমধ্যে তিনি ভূলে গেলেন? নির্বাচন সামনে এলে হয়ত নতুন করে মনে পরবে এই প্রতিশ্রুতি, কিন্তূ ততদিনে বোধহয় খুব বেশী দেরী হয়ে যাবে। আর এই দেরী নতুন করে প্রস্তূত করবে মাওলানা নিজামীর মত স্বীকৃত যুদ্বাপরাধীর পতাকা উড়িয়ে ঢাকা শহর চষে বেড়ানোর নতুন প্রেক্ষাপট।


ভালো লাগলে শেয়ার করুন